দুটি সমুদ্রগামী আফ্রাম্যাক্স অয়েল ট্যাংকার ক্রয়ের জন্য এমজেএল বাংলাদেশ-কে ঋণসুবিধা দিয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক। এই উল্লেখযোগ্য অর্থায়ন সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে এমজেএল বাংলাদেশের সাথে চুক্তি করেছে ব্র্যাক ব্যাংক। আফ্রাম্যাক্স অয়েল ট্যাংকার হলো সমুদ্রে বাংলাদেশি পতাকাবাহী সর্ববৃহৎ জাহাজ।
৯৫.৭৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের এই অর্থায়ন সুবিধা বাংলাদেশের বেসরকারি ব্যাংক কর্তৃক শিপিং ও পেট্রোলিয়াম লজিস্টিক খাতে প্রদান করা সর্ববৃহৎ একক বৈদেশিক মুদ্রা (এফসিওয়াই) অফশোর ব্যাংকিং টার্ম লোন।
এই চুক্তির অংশ হিসেবে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পেট্রোলিয়াম কোম্পানিগুলোকে সমুদ্র পরিবহন সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান এমজেএল বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই নিজেদের বহরে একটি ‘এমটি ওমেরা গ্যালাক্সি’ নামক আফ্রাম্যাক্স শ্রেণির তেলবাহী ট্যাংকার যুক্ত করেছে। উল্লেখ্য, ১,১৫,৬০০ ডেডওয়েট টন (ডিডব্লিউটি) ক্ষমতাসম্পন্ন এ জাহাজ বাংলাদেশি পতাকা বহনকারী সর্ববৃহৎ সমুদ্রগামী জাহাজ।
এই সাফল্যের ধারাবাহিকতায় এমজেএল বাংলাদেশ ‘এমটি ওমেরা লিবার্টি’ নামক আরেকটি আফ্রাম্যাক্স অয়েল ট্যাংকার কেনার উদ্যোগ নিয়েছে, যা বর্তমানে একটি বিশ্বখ্যাত জাহাজ নির্মাণ কারখানায় নির্মাণাধীন।
২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ঢাকায় মবিল হাউজে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও তারেক রেফাত উল্লাহ খান এবং এমজেএল বাংলাদেশের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার মো: মুকুল হোসেন। এসময় ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারপারসন মেহেরিয়ার এম. হাসান এবং এমজেএল বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আজম জে. চৌধুরী এবং এমজেএল বাংলাদেশের ডিরেক্টর তানজিল চৌধুরীসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এই অর্থায়ন সুবিধা এমজেএল বাংলাদেশকে নিজেদের বহরে আধুনিক জাহাজ যুক্ত করার সুযোগ দেবে, যা বাংলাদেশের সামুদ্রিক লজিস্টিক সক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করবে এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সহজতর করবে।
এই উদ্যোগ সম্পর্কে ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও তারেক রেফাত উল্লাহ খান বলেন, “এই চুক্তি বহুদিক থেকে একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। এটি শিপিং খাতে বাংলাদেশের কোনো বেসরকারি ব্যাংক কর্তৃক করা সর্ববৃহৎ ফরেন কারেন্সি অফশোর টার্ম লোন, যা বাংলাদেশি পতাকা বহনকারী সমুদ্রগামী জাহাজ বহরে যুক্ত করবে দেশের সর্ববৃহৎ জাহাজ। এটি বৃহৎ পরিসরে অর্থায়নের ব্যাপারে ব্র্যাক ব্যাংকের সক্ষমতার প্রতিফলন। এই অর্থায়ন সুবিধা সামুদ্রিক লজিস্টিক শক্তিশালী করার পাশাপাশি বাংলাদেশের ব্যবসায়-বাণিজ্য ও দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে, যা দেশে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখবে।”
ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি.:
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতের অর্থায়নে অগ্রাধিকার দেয়ার ভিশন নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি. ২০০১ সালে যাত্রা শুরু করে, যা এখন পর্যন্ত দেশের অন্যতম দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী একটি ব্যাংক। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ‘BRACBANK’ প্রতীকে ব্যাংকটির শেয়ার লেনদেন হয়। ১৯১টি শাখা, ৯৭টি উপশাখা, ৩৩০টি এটিএম, ৪৪৬টি এসএমই ইউনিট অফিস, ১,১২১টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট এবং দশ হাজারেরও বেশি মানুষের বিশাল কর্মীবাহিনী নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক কর্পোরেট ও রিটেইল সেগমেন্টেও সার্ভিস দিয়ে আসছে। ব্যাংকটি দৃঢ় ও শক্তিশালী আর্থিক পারফরম্যান্স প্রদর্শন করে এখন সকল প্রধান প্রধান মাপকাঠিতেই ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষে অবস্থান করছে। বিশ লাখেরও বেশি গ্রাহক নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক বিগত ২৪ বছরেই দেশের সবচেয়ে বৃহৎ জামানতবিহীন এসএমই অর্থায়নকারী ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের ব্যাংকিং খাতে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও নিয়মানুবর্তিতায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।